Asteroid (52768) 1998 OR2

২৯ এপ্রিল ২০২০ তে একটি বেশ বড় এস্টেরয়েডের ইম্ফেক্টের ফলে আমাদের পৃথিবী ধ্বংস হতে চলেছে এবং এর সাথে সাথে পৃথিবীতে অবস্থিত সকল প্রজাতিও ধ্বংস হতে চলেছে। 

ঠিক এই ধরনেরই কিছু খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর মাত্রায় ভাইরাল হতে দেখা যাচ্ছে। আর নিশ্চয় আপনিও এই ভাইরাল নিউজটি দেখেছেন। ২০২০ এর শুরু থেকেই পৃথিবীতে বেশ কিছু মহামারি (Corona Virus), তাণ্ডব ঘটেই চলেছে। কিন্তু এই ২৯ এপ্রিল ২০২০ তে এস্টেরয়েড ইম্পেক্টের এই ঘটনাটি কতটা সত্য তা আমরা আজকে জানতে চলেছি।

সবথেকে প্রথমে এই খবরটি একটি ইংলিশ পত্রিকায় "Daily Express" এ প্রচার করা হয়েছিল। ওইখানে বলা হয়েছি, ২৯ এপ্রিল (52768) 1998 OR2 নামক একটি এস্টেরয়েড পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে। আসলে এই এস্টেরয়েডটিকে বিজ্ঞানীরা আজ থেকে নয় বরং ২০ বছর আগে থেকে অর্থাৎ ১৯৯৮ থেকেই ট্র্যাক করছে। এই এস্টেরয়েডটিকে ১৯৯৮ এ ডিস্কভার করা হয়েছিল। আর এতদিন ধরে ট্র্যাক করার পর বিজ্ঞানীদের কাছে এই এস্টেরয়েডের ব্যাপারে বেশ কিছু তথ্য আগে থেকেই রয়েছে। যেমন এই এস্টেরয়েডটির ডায়ামিটার হলো ৪.১ কিলোমিটারের কাছাকাছি অর্থাৎ এই এস্টেরয়েডটি ৫টি "BURG KHALIFA" এর সমান এবং মাউন্ট এভারেস্ট এর অর্ধেক।

মাউন্ট এভারেস্ট, "Burg Khalifa"

বর্তমানে এই এস্টেরয়েডটির স্পীড হলো ৩০,০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। পৃথিবীতে অবস্থিত সবচেয়ে বড় এয়ার ক্র্যাফট অর্থাৎ X-15 এর সর্বচ্চ স্পীড হলো ৭০২৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। অর্থাৎ এই এস্টেরয়েডটি X-15 এর চেয়েও চার গুন বেশি স্পীডে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে। এইবার যদি অর্ধেক মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা সম্পন্ন কোনও অবজেক্ট ৩০,০০০ কিলোমিটার বেগে এসে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে,  তাহলে অবশ্যই এটি পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন এইটা নয়, এস্টেরয়েডটির এত স্পীড বা এস্টেরয়েডটি কত বড়। প্রশ্ন হল এই যে সত্যিই কি এস্টেরয়েডটি পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়বে নাকি এটি একটি ভুয়া খবর ! এই প্রশ্নটির সত্যটা জানতে চাইলে আমাদেরকে কিছু অফিসিয়াল রিপোর্টস এর ওপর নজর দিতে হবে।

Asteroid Watch এর অফিসিয়াল Twitter একাউন্টে দেওয়া ইনফরমেশানের হিসেবে এই এস্টেরয়েডটি ২৯ এপ্রিলে পৃথিবী থেকে 3.9 Million Miles অর্থাৎ 6.2 Million Km দূর দিয়েই পার হয়ে যাবে।

Asteriod Watch-- Twitted


অর্থাৎ এই এস্টেরয়েডটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৬,২০০,০০০ কিলোমিটার দূর দিয়ে পার হয়ে যাবে। চাঁদ থেকে আমাদের পৃথিবীর দুরুত্ত ৩,৮৪,৪০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ যখন এটি পৃথিবীর কাছ দিয়ে যাবে, তখন এইটির দুরুত্ত পৃথিবী থেকে চাঁদের দুরুত্তের ও ১৬ গুন বেশি হবে,  এইবার নিশ্চয় এই ডাটাগুলকে এনালাইজিস্ট করে আপনি বুজতে পেরেছেন, যে দুরুত্তটা কতটা। তো চলুন এইবার আমরা কিছু একচুয়াল এভিডেঞ্চ দেখে নি, যা ধারা একেবারেই শিউর হতে পারি যে, না এই এস্টেরয়েড এর ফলে পৃথিবীর কোনও ধরনের ক্ষতি হবে না।

Space রিলেটেড কোনও শিউর শর্ট এভিডেঞ্চের জন্য লোকেরা "National Aeronautics and Space Administration" অর্থাৎ "NASA" এর কাছ থেকে ডাটা কালেক্ট করে। তো চলুন আমরা জেনে নেই "NASA" এই ব্যাপারে কি বলে !

এস্টেরয়েড রিলেটেড কোনও ইনফরমেশানের জন্য আপনি NASA এর অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে গিয়ে তা পেতে পারেন। "NASA" এর অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে "NEO Earth Close Approaches" এর ব্যাপারে একদম নিখুঁত ইনফর্মেশন পেতে পারেন।

NASA Website Link - NASA 

(52768) 1998 OR2 Information


এইখান থেকে আপনি (52768) 1998 OR2 এস্টেরয়েডটির সব ইনফর্মেশন পেয়ে যাবেন, যেমন এখন এস্টেরয়েডটি কোথায় আছে, কতটুকু দুরুত্তে আছে, কতটুকু দুরুত্ত দিয়ে পার হবে। এটি পৃথিবীর কোনও ক্ষতিই করতে পারবে না।  যদি হ্যাঁ, এই কথাটিও আপনার জেনে রাখা উচিৎ যে, যদি এস্টেরয়েডটি তার সঠিক আকার এবং আয়তন নিয়ে যদি হাই স্পীডে পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে তাহলে তার কি পরিণতি হতে পারে তা আপনি ইতিহাসেই পড়েছেন। কারন এইভাবেই কয়েক কোটি বছর আগে পৃথিবী থেকে ডাইনাসোর নিসছিনহ হয়ে গিয়েছিল। তাহলে একবার ভেবে দেখুন একটা এস্টেরয়েড ডাইনাসোর এর মতো বিশাল প্রাণীদের যদি ধ্বংস করে দিতে পারে, সেখানে মানুষের মতো ক্ষুদ্র প্রাণীর কি অবস্থা হবে।

আজ আমরা যতই টেকনলোজিকাল ফিল্ডে এডভান্স হই না কেনো, Space থেকে আশা বড় ও ভয়ংকর Unknown চ্যালেঞ্জ গুলোর সাথে কোনোদিনই যুদ্ধ করতে পারবো না। কিন্তু হ্যাঁ যদি ২৯ এপ্রিল এর কথা বলি, তাহলে এই পৃথিবী এবং এই পৃথিবীতে বাস করা সকল জীব একদম SAFE রয়েছে। এই এস্টেরয়েডের ফলে কোনো ক্ষতিই হবে না।

আশা করি এইবার আপনি সোশ্যাল মিডিয়াই ভাইরাল হওয়া, FAKE খবরটির REAL ফ্যাক্ট এবং ইনফরমেশান গুলিকে বুজতে পেরেছেন।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

লিখাটি ভালো লাগলে Share করতে ভুলবেন না। Share করে সবাইকে সঠিক NEWS টি জানতে সাহায্য করুন।


****************************😊😊😊😊😊****************************